Hot Posts

6/recent/ticker-posts

ডঃ দীনেশ ত্যাগী: এক অভিভাবক, এক অনুপ্রেরণা – পশ্চিমবঙ্গ ভিএলইদের হৃদয়ে তাঁর চিরন্তন স্থান

ডঃ দীনেশ ত্যাগী: এক অভিভাবক, এক অনুপ্রেরণা – পশ্চিমবঙ্গ ভিএলইদের হৃদয়ে তাঁর চিরন্তন স্থান


আজকের দিনে যখন ডিজিটাল ভারত দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে, তখন কিছু মানুষ আছেন যাদের নেতৃত্ব, দূরদর্শিতা এবং সহানুভূতি এই যাত্রাকে আরও অর্থবহ করে তুলেছে। ডঃ দীনেশ ত্যাগী স্যার তেমনই একজন ব্যক্তিত্ব, যিনি শুধুমাত্র একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ছিলেন না, বরং সিএসসি ভিএলইদের কাছে ছিলেন এক প্রকৃত অভিভাবক, এক আপনজন। তাঁর প্রজ্ঞা, দূরদর্শিতা এবং সর্বোপরি তাঁর দয়ালু হৃদয় পশ্চিমবঙ্গের হাজার হাজার ভিএলই-এর মন জয় করে নিয়েছে।

এক পরিবারের মতো সম্পর্ক: 


ডঃ ত্যাগী বরাবরই ভিএলইদের একটি পরিবারের সদস্যের মতো দেখেছেন। তাদের প্রতিটি সমস্যায়, প্রতিটি প্রতিকূল পরিস্থিতিতে তিনি পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাঁর গভীর জ্ঞান এবং পরিস্থিতির আগাম আন্দাজ করার ক্ষমতা ভিএলইদের অনেক জটিল পরিস্থিতি থেকে বের করে এনেছে। তাঁর প্রজ্ঞা শুধু সঠিক পথই দেখায়নি, বরং আস্থা ও সাহস জুগিয়েছে। অনেক ভিএলই আজও স্মরণ করেন, কীভাবে সামান্য একটি সমস্যায় তিনি ব্যক্তিগতভাবে উদ্যোগী হয়ে সমাধান করেছেন, যা অন্য কোনো উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার কাছ থেকে আশা করা যায় না।


সরলতা ও বিনয়ের প্রতীক:


ডঃ ত্যাগী স্যারের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিকটি হলো তাঁর অসামান্য সরলতা এবং বিনয়। তিনি কখনই তাঁর পদমর্যাদা বা ক্ষমতার প্রদর্শন করেননি। এই সেদিনও তিনি বীরভূম জেলায় ভিএলইদের সাথে কাটানো কিছু বিরল মুহূর্তের ছবি সংযুক্ত করে একটি টুইটের উত্তর দিয়েছেন (https://x.com/dintya15/status/1941719626284495062)। ছবিটি নিজেই কথা বলছে – কীভাবে তিনি ভিএলইদের সাথে বসে তাদের সঙ্গে টিফিন খাচ্ছেন, কোনো প্রোটোকল বা আনুষ্ঠানিকতার তোয়াক্কা না করে তাদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনা করছেন। তাঁর এই মাটির কাছাকাছি থাকা মনোভাবই পশ্চিমবঙ্গের ভিএলইদের কাছে তাঁকে এত প্রিয় করে তুলেছে। এই ছবিগুলো তাঁর "ডাউন টু আর্থ" ব্যক্তিত্বের এক উজ্জ্বল উদাহরণ।




নেতৃত্বের উদাহরণ:


সিএসসি ই-গভর্নেন্স সার্ভিসেস ইন্ডিয়া লিমিটেড-এর সিইও এবং এমডি হিসেবে ডঃ ত্যাগী স্যার প্রায় এক দশক ধরে সিএসসি আন্দোলনকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাঁর সময়ে, ২০১৪ সালে যেখানে সিএসসি-র সংখ্যা ছিল প্রায় ৬০,০০০, ২০২২ সালের মধ্যে তা বেড়ে ৫ লক্ষেরও বেশি হয়। এই বিশাল সম্প্রসারণ প্রমাণ করে তাঁর অসাধারণ নেতৃত্ব ক্ষমতা। তিনি শুধু সংখ্যা বাড়াননি, বরং গুণগত মান এবং পরিষেবার বৈচিত্র্য বাড়ানোর দিকেও নজর দিয়েছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে, সিএসসিগুলি কেবল সরকারি পরিষেবা বিতরণের কেন্দ্র হিসেবেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, বরং গ্রামীণ উদ্যোক্তা তৈরি, ডিজিটাল সাক্ষরতা বৃদ্ধি এবং আর্থিক অন্তর্ভুক্তির এক শক্তিশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে।


তাঁর অবদানে সিএসসি-র রূপান্তর:


ডঃ ত্যাগী স্যারের অবদান ছাড়া সিএসসি আজকের অবস্থানে আসতে পারত না। তিনি ডিজিটাল ইন্ডিয়ার স্বপ্নকে তৃণমূল স্তরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। তাঁর সময়কালে সিএসসিগুলিতে বিভিন্ন ধরনের পরিষেবা যেমন – আধার, প্যান, ব্যাংকিং, বীমা, শিক্ষা (যেমন PMGDISHA এর মাধ্যমে ডিজিটাল সাক্ষরতা), স্বাস্থ্যসেবা (যেমন টেলিমেডিসিন), এবং কৃষির সাথে সম্পর্কিত পরিষেবাগুলি যুক্ত হয়, যা গ্রামীণ মানুষের জীবনকে সহজ করে তুলেছে। তিনি ভিএলইদের ক্ষমতায়নের উপর বিশেষ জোর দিয়েছিলেন, তাদের প্রশিক্ষণ এবং সহায়তার মাধ্যমে স্বাবলম্বী করে তুলেছিলেন।



পশ্চিমবঙ্গ ভিএলইদের সাথে বিশেষ বন্ধন:


পশ্চিমবঙ্গের ভিএলইদের সাথে ডঃ ত্যাগীর সম্পর্ক ছিল সত্যিই বিশেষ। পশ্চিমবঙ্গের ভৌগোলিক ও সামাজিক বৈচিত্র্য তিনি খুব কাছ থেকে উপলব্ধি করতেন। তাঁর সহজলভ্যতা এবং বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ ভিএলইদের যেকোনো সমস্যা নিয়ে তাঁর কাছে যেতে উৎসাহিত করত। তিনি জানতেন, গ্রামীণ স্তরে পরিষেবা প্রদানে কী কী চ্যালেঞ্জ আসতে পারে এবং সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ভিএলইদের কী ধরনের সহায়তা প্রয়োজন। এই পারস্পরিক বিশ্বাস এবং শ্রদ্ধাই তাঁকে পশ্চিমবঙ্গের ভিএলইদের কাছে 'স্যার' এর চেয়েও বেশি কিছু করে তুলেছে – একজন সত্যিকারের অভিভাবক, একজন পথপ্রদর্শক।



এক দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান: ডঃ দীনেশ ত্যাগী স্যারের প্রত্যাবর্তন – এক নতুন উদযাপনের সূচনা


দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে, ডঃ দীনেশ ত্যাগী স্যার যখন পুনরায় সিএসসি পরিবারে ফিরে এসেছেন, তখন গোটা ভারতজুড়ে সিএসসি ভিএলইদের মধ্যে আনন্দের ঢেউ। পশ্চিমবঙ্গের ভিএলইরা, বিশেষ করে আমাদের পশ্চিমবঙ্গ সিএসসি ভিএলই মোর্চা, এই শুভ প্রত্যাবর্তনকে এক বিশাল উৎসবের মতো উদযাপন করছে। তাঁর অভিজ্ঞতা, দূরদর্শিতা এবং ভিএলইদের প্রতি তাঁর অকৃত্রিম ভালোবাসা সিএসসি আন্দোলনকে এক নতুন দিশা দেবে বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। তাঁর ফেরা কেবল একটি পদাধিকারীর প্রত্যাবর্তন নয়, এটি পরিবারের এক হারানো অভিভাবকের ফিরে আসা, যা লক্ষ লক্ষ ভিএলই-এর মনে নতুন আশা ও উদ্দীপনা সঞ্চার করেছে। আমরা নিশ্চিত যে তাঁর নেতৃত্বে সিএসসিগুলি আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে এবং ডিজিটাল ভারত গড়ার স্বপ্নকে আরও দ্রুত বাস্তবায়িত করবে।





Post a Comment

0 Comments